Wellcome to National Portal
কৃষি তথ্য সার্ভিস (এআইএস) গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার
Text size A A A
Color C C C C

নিরাপদ ফলমূল উৎপাদন ও বাজারজাতকরণ

নিরাপদ ফলমূল উৎপাদন ও বাজারজাতকরণ
কৃষিবিদ মো. রাজু আহমেদ

কৃষি প্রধান এদেশের জাতীয় আয় বৃদ্ধি, দারিদ্র্য বিমোচন ও পুষ্টির চাহিদা পূরণে ফলমূলের অবদান অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। পুষ্টিমানের বিচারে আমাদের দৈনিক খাদ্যের তালিকায় ফলমূলের উপস্থিতি অত্যন্ত জরুরি। ফলমূলে আছে বিভিন্ন ভিটামিন ও খনিজ লবণ যা রোগের হাত থেকে মানুষকে রক্ষা করতে পারে। ফল আমাদের দেশে একটি জনপ্রিয় উদ্যানতাত্ত্বিক ফসল। রং, গন্ধ, স্বাদ ও পুষ্টির বিবেচনায় বাংলাদেশের ফল খুবই গুরুত্বপূর্ণ ও বৈচিত্র্যময়। ফল রান্না ছাড়া সরাসরি খাওয়া হয় বিধায় এতে বিদ্যমান সবটুকু পুষ্টি গ্রহণ করা যায়। এ ছাড়া বিভিন্ন ফলে রয়েছে ক্যান্সার প্রতিরোধকারী উপাদান এন্থোসায়ানিন ও লাইকোপেন। বাংলাদেশে প্রচুর পরিমাণে ফলমূল উৎপাদিত হলেও নিরাপদ ফল উৎপাদনে বেশ ঘাটতি যেমন রয়েছে তেমনি বাজারজাতকরণেও আছে নানা সমস্যা। উত্তম কৃষি ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে ফল উৎপাদনে  প্রয়োজনীয় তথ্য-উপাত্ত অনুসরণ করে নিজেদের পুষ্টি চাহিদা পূরণ, আর্থসামাজিক উন্নয়নসহ উদ্বৃত্ত নিরাপদ ফলমূল বিদেশে রপ্তানি করে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারবে।
নিরাপদ ফলমূল উৎপাদনে উত্তম কৃষি চর্চা (এঅচ)
উত্তম কৃষি ব্যবস্থাপনা উল্লেখযোগ্য বিষয়গুলার মধ্যে ফলমূল উৎপাদনের কাজে নিয়োজিত মাঠকর্মী, কৃষক-কৃষানি এবং ভোক্তাগণের সুস্বাস্থ্য নিশ্চিত করে। পরিবেশ, মাটি ও পানিকে দূষণ থেকে রক্ষা করে। রাসায়নিক উপাদানের পরিমিত ব্যবহার নিশ্চিত করে। স্বাস্থ্যকর, দূষণহীন এবং উচ্চ মানসম্পন্ন নিরাপদ ফলমূল উৎপাদনের মাধ্যমে পুষ্টিমান বৃদ্ধি করে। কৃষি পরিবারের অর্থনৈতিক উন্নতি সাধন করে। জীব বৈচিত্র্যের ভারসাম্য রক্ষা করে।
উত্তম কৃষি পদ্ধতির এই মূলনীতিগুলো অবশ্যই জমি নির্বাচন, জমি তৈরি, ফসল উৎপাদনের সময়, ফসল সংগ্রহ এবং ফসল সংগ্রহোত্তর সময় অনুসরণ করতে হবে।  
১। পরিষ্কার মাটি/মাঠ : পরিষ্কার মাঠ বা মাটি, মাটির মধ্যে দূষণকারী অণুজীবসমূহের উপস্থিতির সম্ভাবনা কমিয়ে দেয় যা মূলত বিভিন্ন জৈব সার ও অন্যান্য পশু-পাখির মলমূত্র থেকে হতে পারে। উত্তম কৃষি ব্যবস্থাপনা পদ্ধতি এই জৈব সারগুলোর সঠিকভাবে পচানো, ব্যবহার এবং সংরক্ষণ নিশ্চিত করে । এছাড়াও গৃহপালিত পশু-পাখি ফসলের মাঠ থেকে দূরে রাখার মাধ্যমে মাটিতে দূষণকারী অণুজীবের উপস্থিতি কমায়।
২। পরিষ্কার পানি : ফলমূল ধৌত করা, ঠাণ্ডা করা এবং অন্যান্য কাজে যে পানি ব্যবহার করা হয় তা অবশ্যই খাওয়ার উপযোগী পানি। প্যাকিং এর সময় যে বরফ ব্যবহার করা হয় তাও অবশ্যই খাওয়ার উপযোগী পানি দিয়ে করতে হবে। পুকুর বা নালার পানি হলে তা অবশ্যই পশু-পাখি দ্বারা দূষণ এবং অন্য কোন মাধ্যমের নোংরা পানি থেকে মুক্ত হতে হবে। সেচের জন্য এবং স্প্রে করার কাজে যে পানি ব্যবহৃত হবে তা অবশ্যই মনুষ্য বাহিত রোগ জীবাণু থেকে মুক্ত থাকতে হবে।
৩। পরিষ্কার হাত : সকল প্রকার কাজ যেমন: মাঠ পরিচর্যা, ফসল সংগ্রহ, ফসল বাছাইকরণ, ফসল প্যাকিং ইত্যাদি সকল কাজের আগে মাঠকর্মীদের অবশ্যই ভালো করে হাত ধৌত করতে হবে এবং পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন কাপড় পরিধান করতে হবে। ক্রেতারা যারা ফলমূল কিনতে আসবে তাদের জন্য ও হাত বা শরীরের অন্যান্য অংশ পরিষ্কার করার ব্যবস্থা রাখতে হবে।
৪। পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন কাজের জায়গা: প্যাকিং করার বাক্স, প্যাকিং এর কাজে ব্যবহৃত জায়গা/টেবিল/মেঝে, সংরক্ষণাগার, পরিবহণকারী ট্রাক/গাড়ি ইত্যাদি অবশ্যই নিয়মিত ভালোভাবে পরিষ্কার পরিচ্ছণ্নতা এবং জীবাণুমুক্ত রাখতে হবে। ফসলের মাঠে, প্যাকিং হাউজে, পরিবহণ ইত্যাদিতে ব্যবহৃত সকল প্রকার যন্ত্রাংশ কাজের আগে এবং পরে অবশ্যই প্রতিদিন পরিষ্কার ও জীবাণুমুক্ত করতে হবে।
উত্তম কৃষি চর্চা (এঅচ) বাস্তবায়ন পদ্ধতি
উত্তম কৃষি পদ্ধতি অনুযায়ী যে সকল ধাপসমূহ অবশ্যই বাস্তবায়ন করতে হবে তা নিম্নে বর্ণনা করা হলো-
১. কৃষক/মাঠ কর্মীদের উন্নত কাজের পরিবেশ ২. চাষাবাদের জন্য সঠিক স্থান নির্বাচন ৩. সঠিক উপায়ে মাটি প্রস্তুত ৪. চাষাবাদের পরিবেশ, চাষ পদ্ধতি এবং ফসল উৎপাদন ৫. পানির গুণাগুণ ও তার যথোপযুক্ত ব্যবহার ৬. সঠিক উপায়ে কীটনাশক/বালাইনাশক এর ব্যবহার ও ব্যবস্থাপনা ৭. সঠিক উপায়ে রাসায়নিক সারের ব্যবহার ও ব্যবস্থাপনা ৮. উত্তম উপায়ে জৈবসার প্রস্তুত, ব্যবহার ও ব্যবস্থাপনা ৯. বিভিন্ন প্রকার পশু-পাখির যত্ন ১০. ফসল সংগ্রহকালীন সঠিক ব্যবস্থাপনা             ১১. ফসল সংগ্রহোত্তর সঠিক ব্যবস্থাপনা ১২. উৎপাদনের সকল পর্যায়ের বিভিন্ন তথ্য সংরক্ষণ।
উত্তম কৃষি ব্যবস্থাপনা অনুসরণ করার মাধ্যমে উৎপাদন থেকে শুরু করে ভোক্তা পর্যন্ত  প্রতিটি পর্যায়ে প্রায় শতভাগ ফসল নষ্ট হওয়া থেকে রক্ষা করা যায়।
ফলমূল বাজারজাতকরণ
কৃষি নির্ভর এদেশের গ্রামীণ অর্থনীতির প্রধান ধারক হলো           কৃষিপণ্যের বাজারজাতকরণ ব্যবস্থা। বাংলাদেশে কৃষি পণ্যের বাজারজাতকরণ ব্যবস্থা অতি সনতনী এবং বহুলাংশে অনুৎপাদনশীল। বাংলাদেশে প্রধানত তিন ধরনের কৃষি বাজার দেখা যায়। ১। প্রাথমিক বাজার হলো একেবারে গ্রাম্য বাজার। যেখানে সাধারণত কৃষকগণ অল্প বিস্তর জিনিস সংগ্রহ করে খুচরা কেনাবেচা করে থাকেন। ২। মাধ্যমিক বাজারসমূহ পাইকারি বাজারের সমন্বয়ে গঠিত। এগুলো উৎপাদন এলাকায় সংগ্রহকরণ বাজার হিসেবে এবং ভোগ্য এলাকায় বণ্টন বাজার হিসেবে কাজ করে। ৩। প্রান্তিক বাজারগুলো অভ্যন্তরীণ ও রপ্তানি বাণিজ্য সংক্রান্ত কতিপয় কার্যাবলী সম্পাদন করে।
কৃষিপণ্য সহজে বাজারজাতকরণ করতে হলে উন্নতমানের পণ্য উৎপাদন করতে হবে; পণ্য মান, আকার, বর্ণনা ও নমুনার ভিত্তিতে বাছাই করতে হবে; পাইকারি বাজারে সরবরাহ করতে হবে; বাজার চাহিদার দিকে নজর রাখতে হবে; বাজার দরসহ বাজার তথ্য সংগ্রহ করতে হবে; ফসল অপেক্ষাকৃত সহনীয়ভাবে প্যাকিং করতে হবে; ভালোভাবে পরিবহণ করতে হবে, যাতে পণ্যের গুণগতমান ও রং ক্ষতিগ্রস্ত না হয়; বাজারে অযাচিত হয়রানি/ঝুঁকি হ্রাস করতে হবে; বিপণন ব্যয় কম রাখা, অর্থাৎ কৃষক বান্ধব পরিবেশ থাকতে হবে; উন্নত ওজন মাপ পদ্ধতি অনুসরণ করা; পণ্য সংরক্ষণের ভালো ব্যবস্থা থাকা। বাংলাদেশের প্রথম ডিজিটাল প্লাটফরম (ঋড়ড়ফ ঋড়ৎ ঘধঃরড়হ) যঃঃঢ়ং://ভড়ড়ফভড়ৎহধঃরড়হ. মড়া.নফ/ যেখানে ফলমূল বাজারজাতকরণে প্রয়োজনে যোগাযোগ করা যেতে পারে।
এছাড়াও ফলের ফলমূলের ভাল দাম পাবার জন্য নিম্নোক্ত বিষয়গুলো বিবেচনায় নেওয়া দরকার।
বাজারে সঠিক ক্রেতা চিহ্নিতকরণ, তাদের চাহিদা ও পছন্দ জানা, বাজারমুখী উৎপাদন পরিকল্পনা, পছন্দ অনুযায়ী সঠিক  পণ্য (মান ও ধরন), সঠিক সময়ে, সঠিক স্থানে, সঠিক মাত্রায় সঠিক মূল্যেপৌঁছানো, সরবরাহ পূর্ণমাত্রায় নিয়ন্ত্রণ করা, পণ্য সম্পর্কীয় তথ্য প্রচারের ব্যবস্থা করা, প্রাতিষ্ঠানিক ক্রেতা /প্রক্রিয়াজাতকারী/ ব্যবসায়ীদের সাথে আগাম চুক্তি করা যেতে পারে।
বর্তমানে চালু বিপণন চ্যানেলগুলো আরো উন্নত করার জন্য নিম্নলিখিত বিষয়সমূহ জানতে হবে-
সমস্যাগুলো চিহ্নিত করা, সংশোধনের ব্যবস্থা নেওয়া, বিপণন কার্যাবলী বিজ্ঞান ভিত্তিকভাবে সম্পূর্ণকরণ, প্রশিক্ষণ, মোটিভেশন, ভ্যালু চেইন এ্যপ্রোচ, গ্রুপ বিপণন ব্যবস্থাপনা।
সর্বোপরি উত্তম কৃষি চর্চা (এঅচ) সম্পর্কিত নীতিমালা বাস্তবায়নের পর যে সকল কৃষক/কৃষানি কমিউনিটি অথবা কৃষি প্রতিষ্ঠান নীতিমালা অনুযায়ী চাষ করতে আগ্রহী তাদের এঅচ সম্পর্কিত প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করতে হবে। ইতোমধ্যে কৃষি মন্ত্রণালয় এর অধীন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর ‘ঢাকা, মানিকগঞ্জ, মুন্সীগঞ্জ, নরসিংদী ও নারায়ণগঞ্জ জেলায় উত্তম কৃষি ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে ফল এবং সবজি উৎপাদন, বাজারজাতকরণ কর্মসূচি’ এর আওতায় কৃষক প্রশিক্ষণ চলমান রেখেছে। যে সকল আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান এঅচ নিয়ে কাজ করে (যেমন- ঋঅঙ) তাদের সাথে নিয়মিত যোগাযোগ রক্ষা করতে হবে। বিদেশে ফলমূল রপ্তানিতে নিরাপত্তা ও গুণগত মান অক্ষুণ্ন রাখার লক্ষ্যে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর এর অধীন ঢাকার শ্যামপুরে একটি সেন্ট্রাল প্যাকিং হাউজ নির্মাণ করেছে যার মাধ্যমে বিদেশে ফলমূল রপ্তানি চলমান আছে। ফলমূল রপ্তানিতে বাংলাদেশের এঅচ নীতিমালা দ্রুত বাস্তবায়ন করার মাধ্যমে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে তাদের চাহিদা অনুযায়ী ফলমূল রপ্তানি আরও ত্বরান্বিত হবে বলে আশা করা যাচ্ছে।
কর্মসূচি পরিচালক, ঢাকা, মানিকগঞ্জ, মুন্সীগঞ্জ, নরসিংদী ও নারায়ণগঞ্জ জেলায় উত্তম কৃষি ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে ফল ও সবজি উৎপাদন বাজারজাতকরণ কর্মসূচি, খামারবাড়ি, মোবাইল : ০১৭১৬৩৭৯৪৯৮, ই-মেইল : mdhmd62@gmail.com

 


COVID19 Movement Pass Online Police Clearance BD Police Help line Expatriate Cell Opinion or Complaint NIS Bangladesh Police Hot Line Number Right to Information PIMS Police Cyber Support for Women BPWN Annual Training Workshop Achievement & Success PHQ Invitation Card
Press Release Recruitment Information Procurement / Tender Notice Legal Instrument Innovation Corner Detective Magazine Bangladesh Football Club Diabetes-Covid19 Exam Results Accident Info Important Forms

Apps

icon icon icon icon icon icon